Bangladesh :verified:​ · @Bangladesh
53 followers · 39 posts · Server qoto.org

নবাব মুর্শিদকুলি খান

খান ১৬৬০ সালে হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার নাম ছিল সূর্য নারায়ণ মিশ্র। মুর্শিদকুলি খানকে দরবারের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হাজী শফি ইস্পাহানি ক্রীতদাস হিসেবে ক্রয় করেন। সেখানে মুর্শিদকুলি খান গ্রহণ করেন এবং তার নাম রাখেন মির্জা হাদি। হাজী শফির কাছে তিনি শিক্ষিত হন। পরে তিনি বিদর্ভ প্রদেশ (বর্তমানে ভারতের মহারাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চল) এর দেওয়ান হাজী আব্দুল্লাহ কুরাইশির অধীনে চাকরি নেন। এই সময় মুর্শিদকুলি খান আদায়ের

বিশেষ দক্ষতার কারণে, আওরঙ্গজেবের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

১৭০০ সালে মুর্শিদকুলি খানের নাম মীরজা হাদি থেকে পরিবর্তন করে কার্তালাব খান রাখেন এবং বাংলার গভর্নর হিসেবে নিযুক্ত করেন। সে সময় বাংলার সুবেদার ছিলেন প্রথম বাহাদুর শাহের পুত্র আজিম-উস-শান। আজিম উস শান মুর্শিদকুলি খানের নিয়োগের সন্তুষ্ট ছিলেন না। তিনি বাংলার রাজস্ব দিল্লির ক্ষমতা দখলের জন্য ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মুর্শিদ কুলি খান তৎকালীন , বর্তমান ঢাকায় আসেন এবং রাজস্ব কর্মকর্তা সহ মূঘল কর্মচারীদের নিজের পক্ষে নিয়ে আসেন যা আজিমুশশানকে ক্ষুব্ধ করে।

আজিমুশশান মুর্শিদকুলি খানকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। মুর্শিদকুলি খান হত্যার পরিকল্পনা জেনেও না জানার ভান করেন। আজিমুশশান কর্মকর্তাদের বিদ্রোহের মাধ্যমে মুর্শিদকুলি খানকে হত্যার চেষ্টা করেন যা ব্যর্থ হয়। মুর্শিদকুলি খান এই হত্যার ব্যাপারে আরঙ্গজেবের নিকট চিঠি লিখেন। আরঙ্গজেব রাগান্বিত হয়ে, আজিমুশশানের নিকট চিঠি লিখে এবং বলেন মুর্শিদ কুলি খানের ক্ষতি হলে এর প্রতিশোধ নিবেন এবং এর পরিণতি ভোগ করতে হবে। এতে আজিমুশশান ভীত হয়ে পড়েন এবং মুর্শিদকুলি খানকে বন্ধু হবার প্রস্তাব দেন।

তারপরেও মুর্শিদকুলি খান ঢাকায় নিজেকে অনিরাপদ বোধ করেন এবং বাংলার সুবা অফিস টি ঢাকা থেকে মকসুদাবাদ যা বর্তমান মুর্শিদাবাদের স্থানান্তর করেন, আজিমুশশানের অনুমতি ছাড়াই। ঐতিহাসিকদের মধ্যে মুর্শিদকুলি খান এ কাজ সহজে করতে পেরেছিলেন কারণ আওরঙ্গজেবের সমর্থন ছিল। ১৭০২ সালে মুর্শিদকুলি খান বিজাপুরে যান, আরঙ্গজেবের সাথে দেখা করতে এবং বাংলার রাজস্ব প্রদান করেন। এতে আওরঙ্গজেব খুশি হয়ে তাকে উপাধি দেন এবং নাম পরিবর্তন করে মুর্শিদাবাদ রাখার অনুমতি দেন।

তার এক বছর পরে ১৭০৩ সালে আরঙ্গজেব আজিমুশশানকে বিহারে স্থানান্তরিত করেন এবং ফররুকশিয়ারকে বাংলার সুবাদার করেন। নাম মাত্র বাংলার সুবেদার ছিলেন। এ সময় বাংলার একচ্ছত্র অধিপতি হয়ে ওঠেন মুর্শিদকুল খান। ১৭০৪ সালে মুর্শিদকুলি খান প্রথম মুদ্রা জারি করেন।

১৭০৭ সালে আরঙ্গজেবের মৃত্যু হলে ক্ষমতার পালাবদল ঘটে। দখল করেন তার পুত্র আজম শাহ কিন্তু আজম শাহ আরঙ্গজেবের অন্য পুত্র মোয়াজ্জেমের (প্রথম বাহাদুর শাহ) নিকট পরাজিত হলে সম্রাট হন প্রথম বাহাদুর শাহ।

আজিমুশশান প্রতিশোধ নিতে তার পিতা প্রথম বাহাদুর শাহ কে প্রভাবিত করেন এবং মুর্শিদকুলি খান কে 1708 সালে বাংলা থেকে সরিয়ে দাক্ষিণাত্যের দেওয়ানী দেন।

কিন্তু ১৭১০ সালে আজিমুশশান দিল্লির অভিজাতিদের সমর্থনের উদ্দেশ্যে মুর্শিদকুলি খান কে পুনরায় বাংলার দেওয়ানি করে ফিরিয়ে আনেন। যদিও তাতে তার কোন লাভ ঘটে না। কারণ ১৭১২ সালে তার পিতা প্রথম বাহাদুর শাহ মৃত্যুবরণ করলে মোঘল সম্রাট হন জাহান্দার শাহ। জাহান্দার শাহ অল্প সময়ের জন্য ক্ষমতায় ছিলেন। ১৭১৩ সালে জাহান্দার শাহের মৃত্যু হলে দিল্লির ক্ষমতায় আসেন বাংলার সুবেদার ফররুকশিয়ার। ১৭১৬ সালে ফররুকশিয়ার মুর্শিদকুলি খানকে জাফর খান উপাধি দেন এবং বাংলার সুবেদার নিযুক্ত করেন। এই সময় সম্রাট ফররুকশিয়ার নামমাত্র মুঘল সম্রাট থাকেন, প্রকৃত ক্ষমতা চলে যায় দরবারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের হাতে মূলত সৈয়দ ভাইদের হাতে। এ সময় মুঘল সাম্রাজ্যে বিশৃঙ্খলা পরিবেশ তৈরি হয়।

প্রকৃত মুঘল সম্রাট না থাকায় 1717 সালে মুর্শিদকুলি খান নিজেকে বাংলার নবাব হিসেবে ঘোষণা দেন এবং বাংলার রাজধানী ঢাকা থেকে মুর্শিদাবাদে স্থানান্তরিত করেন। তখনই মুর্শিদকুলি খান হয়ে ওঠেন বাংলার প্রথম স্বাধীন নবাব। বাংলা বিহার, উড়িষ্যার একচ্ছত্র অধিপতি হিসেবে শাসন করতে থাকেন। তিনি ১৭১৭ থেকে ১৭২৭ সাল মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বাংলার স্বাধীন নবাব ছিলেন।

অবকাঠাম:

মুর্শিদকুলি খান দুঘরিয়া অঞ্চলে একটি প্রাসাদ নির্মাণ করেন, একটি দেওয়ান খানা, বিদেশি পর্যটকদের জন্য সরাইখানা ও মসজিদ নির্মাণ করেন। ১৭২০ সালে তিনি টাকশাল নির্মাণ করেন। ১৭২৪ সালে তিনি কাটরা মসজিদ তৈরি করেন যেখানে তার মৃত্যুর পরে তার ইচ্ছা অনুযায়ী তাকে সিঁড়ির নিচে সমাহিত করা হয়।

@bengali_convo
@masindia

নিচের হ্যাস ট্যাগ গুলো ব্যবহার করুন:

#মুর্শিদকুলি #আওরঙ্গজেব #জাহাঙ্গীরনগর #ফররুকশিয়ার #bangladesh #মুঘল #ইসলাম #ধর্ম #রাজস্ব #মকসুদাবাদের #দিল্লি #bangla #bengali #dhaka #bangladeshi #bd #বাংলাদেশ #বাংলা #বাঙালী #ঢাকা #বাংলাদেশী

Last updated 1 year ago