বাংলাদেশে মহম্মদ জাফর ইকবাল টুকে বই লিখেছেন এই অভিযোগ ওঠার পর থেকে যেসব পোস্ট সমাজমাধ্যমে দেখছি, তার কমেন্টগুলো দেখলে একটা কথা পরিস্কার হয়। যেহেতু উনি ক্লাস সেভেনের পাঠ্যবইতে ডারউইনের তত্ত্ব নিয়ে লিখেছেন, তাই অনেকে ডারউইনের তত্ত্বটাকেই ভুল বলতে চাইছেন। তাঁরা সেই বাবা আদমের কাহিনীকে সত্য প্রমাণ করতে চাইছেন। তাঁদের অস্ত্র হয়েছে কিছু ফেক খবর (ভারতের মতো ওদেশেও ফেসবুক - হোয়াটসঅ্যাপ বিশ্ববিদ্যালয়ের রমরমা)।
ডারউইনের তত্ত্ব নিয়ে এখানে আলোচনা করার মতো পরিসর নেই,আমার অত জ্ঞানও নেই। তবু, গত কয়েকবছর বিজ্ঞানচর্চার সঙ্গে যুক্ত থাকায় যেটুকু বুঝেছি, তার ভিত্তিতে কিছু কথা বলাই যায়। দেখুন, ডারউইনের তত্ত্বের অনেক কথাই পরবর্তীতে ভুল প্রমাণিত হয়েছে, কিন্তু তাতে তাঁর 'যোগ্যতমের উদবর্তন' কিম্বা 'প্রাকৃতিক নির্বাচন' তত্ত্বের মূল কথাটা ভুল প্রমাণিত হয়নি। হুগো দ্য ভ্রিসের 'পরিব্যক্তিবাদ', মেন্ডেলের জিনগত গবেষণা, ভাইসম্যানের 'জার্মপ্লাজম মতবাদ' এবং হ্যালডেন, দোবঝেনস্কি প্রমুখের 'সংশ্লেষণ তত্ত্ব' ডারউইনের ত্রুটিগুলি সংশোধন করে তাকে পূর্ণতা দান করেছে। আজকের জিনগত গবেষণা এখনও সেই কাজ করে চলেছে। স্বর্গীয় কোনো সত্তা থেকে মানুষের সৃষ্টি— এই তত্ত্ব আজও বিজ্ঞানের দরবারে অস্বীকৃত, বরঞ্চ তার বিরুদ্ধে প্রমাণই আছে ভুরিভুরি।
আসলে, ডারউইনের তত্ত্ব আঘাত হেনেছিল ধর্মতন্ত্রের মূলে। চিরকালই মৌলবাদীরা তার বিরোধিতা করেছে। আজও করে আসছে। আজও আমেরিকার রিপাবলিকান দলের একাংশ দাবি করে যে ডারউইনের তত্ত্ব না পড়িয়ে বাইবেলের সাত দিনের সৃষ্টিতত্ত্ব পড়াতে হবে। ভারতের প্রাক্তন মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী ডারউইনের তত্ত্বকে ভুল বলেছিলেন স্রেফ এই যুক্তিতে যে বেদে বানর থেকে মানুষ জন্মের কথা লেখা নেই। আর বাংলাদেশের অবস্থা তো দেখছিই।
মহম্মদ জাফর ইকবালের খারাপ কাজের বিরোধিতা করুন। তা বলে বিজ্ঞানের সত্যের বিরোধিতা করবেন না।
#বাংলাদেশ #bangladesh #বিজ্ঞান #science #ডারউইন #darwin #ধর্ম #religeon #ভারত #india #আমেরিকা #america
#বাংলাদেশ #bangladesh #বিজঞান #science #ডারউইন #darwin #ধরম #religeon #ভারত #india #আমেরিকা #america #বাংলাযহযাশটযাগ #hashtaginbengali