জানেন কি ভারত উপমহাদেশের প্রথম #ট্যাংকের #আবিষ্কারক কারা?
#ভারতীয় উপমহাদেশে ফারগানা থেকে তৈমুরী যুবরাজ বাবর এসে মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার বহু আগে থেকেই #বাংলায় 'যুদ্ধ #ট্যাংক' ছিলো। মুঘলরা হাতির সাহায্যে হাতির পিঠে #কামান ব্যবহার করলেও এই রীতি প্রচলিত হয়েছিলো বাংলা সালতানাতে।
সেই #প্রাচীনকাল থেকে বাংলার হাতি হিন্দুস্তানের বিন্ধ্যাচলের হাতির চাইতে বিখ্যাত ও অধিক শক্তিশালী। যার প্রমাণ পাওয়া যায় #পাল সাম্রাজ্যের সময় #গৌড় ভ্রমণে আসা আব্বাসীয় খিলাফতের আরব পর্যটক সুলায়মানের বর্ণনায় ও
পাল আমলের বিভিন্ন তাম্রশাসনে। বাঙালি পাল সম্রাট দেবপালের ১,০০,০০০ বর্মাবৃত রণহস্তীর ফৌজ ছিলো। সেসময় প্রাগজ্যোতিষরাজ হর্জর করতোয়া নদীর সীমানা অতিক্রম করে বাংলায় #রাজ্য বিস্তার করলে ক্রুব্ধ হয়ে দেবপাল #যুদ্ধ ঘোষণা করেন এবং সেনাপ্রধান জয়পালকে নির্দেশ দেন প্রাগজ্যোতিষরাজ কে ধরে আনার। বিশাল হস্তীবাহিনী নিয়ে জয়পাল রওনা হলেন হর্জর কে ধরতে। এই বিশাল রণহস্তীর কথা শুনেই হর্জর প্রাণভয়ে পালালেন তিব্বতে, পাল বাহিনীর পদানত হলো #আসাম। দেবপাল ক্রুব্ধ হয়ে পুনরায় নির্দেশ দিলেন-
" যদি সে তিব্বতে (কম্বোজরাজ্য) পালিয়ে যায় তাকে ধরে নিয়ে এসো। কম্বোজরাজ যদি তাকে বাধা হয়ে দাঁড়ায় তাকে হাতির পায়ের নিচে মাড়িয়ে দাও। যদি চীনে পালিয়ে যায় সেখান থেকেও তাকে ধরে আনো!"
#জয়পাল বিশাল বাহিনী নিয়ে যাত্রা করলেন তিব্বতের দিকে..যথারীতি কম্বোজরাজ বাধা হয়ে দাঁড়ালেন..এবং বাংলার হস্তীবাহিনীর সাথে টিকতে না পেরে প্রাণভয়ে আশ্রয় নিলেন চীনে। শুধু তাই নয় যে হর্জরের জন্য এত কিছু, সেও আশ্রয় নিলো চীনে।
সম্রাট দেবপালের শক্তির বর্ণনা দিয়ে হর্জরকে তার হাতে তুলে দেয়ার অনুরোধ জানিয়ে চীন সম্রাটকে #চিঠি লিখলেন জয়পাল। প্রমাদ গুনলেন চীন #সম্রাট..বাঙালির শৌর্যের প্রতীক সেই চিঠি আজও সংরক্ষিত বেইজিংয়ের জাদুঘরে..
• হাতির সাহায্যে প্রথম ট্যাঙ্ক তৈরির ধারণাটি ছিলো সুলতান #ইলিয়াস শাহর।
চট্টগ্রামের পার্বত্য অরণ্য, #ত্রিপুরা ও #সিলেট ছিলো বাংলার হাতির মূল কেন্দ্র। ইলিয়াস শাহ্ হাতির পিঠে কামান বসিয়ে সর্বপ্রথম "পিল মিনার" নামক এই অভিনব ট্যাংক প্রস্তুত করেন। হাতির পিঠে একজন সৈন্য ও চালনা করার জন্য তার সাথে থাকতো একটি 'হালকা কামান'। এই কামান একদালার মহাযুদ্ধের সময় বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিলো..
বাংলা সালতানাতের শেষ #শাসক #বাদশাহ #দাউদ শাহর ছিলো ৩৬০০ যুদ্ধহস্তী (প্রতিদ্বন্দ্বী বাদশাহ আকবরের ছিলো ৫০০০ যুদ্ধহস্তী) হাতির সাহায্যে যুদ্ধবিদ্যায় বাংলার সুলতানদের বীরত্ব ও দূরদর্শিতা প্রশংসনীয়।
বাংলা #সালতানাতে কামান ব্যবহারের প্রমাণ সম্পর্কিত তথ্যসূত্র:-
(১) 'তুযুক-ই-বাবরীতে' সম্রাট বাবর ১৫২৯ ঈসায়ী-অব্দে বাংলা সালতানাত ও বিতাড়িত আফগান ফৌজের সাথে #মুঘল সাম্রাজ্যের #যুদ্ধে (ঘাগরার যুদ্ধ) বাংলার সৈনিকদের কামান ব্যবহারের পারদর্শিতার কথা তুলে ধরেছেন।
(২) 'শূন্যপুরাণ'- রামাই পণ্ডিত
উড়িষ্যা বিজয়ে বাঙালি #মুসলিম সৈন্যদের মাথায় টুপি, মুখে এক আল্লাহর নাম ও হাতে কামান শোভা পাওয়ার কথা বলা আছে..
(৩) হাজারদুয়ারী প্যালেসে সংরক্ষিত তোপ-ই-বাচ্চাওয়ালীর প্রত্নপ্রমাণ
নিচের হ্যাস ট্যাগ গুলো ব্যবহার করুন:
#Bangladesh #Bangla #Bengali #Dhaka #Bangladeshi #Kolkata
#বাংলাদেশ #বাংলা #বাঙালী #ঢাকা #বাংলাদেশী #কলকাতা
#ট্যাংকের #আবিষ্কারক #ভারতীয় #ট্যাংক #যুদ্ধ #সম্রাট #ত্রিপুরা #দাউদ #dhaka #bangladeshi #kolkata #বাংলাদেশ #বাঙালী #কামান #পাল #গৌড় #জয়পাল #ইলিয়াস #সিলেট #শাসক #বাদশাহ #সালতানাতে #মুঘল #মুসলিম #bangla #বাংলায় #প্রাচীনকাল #রাজ্য #আসাম #চিঠি #যুদ্ধে #bangladesh #bengali #বাংলা #ঢাকা #কলকাতা #বাংলাদেশী
১৩৫০ বঙ্গাব্দে ( খ্রি. ১৯৪৩) এই #দুর্ভিক্ষ হয়েছিল বলে একে 'পঞ্চাশের মন্বন্তর' বলা হয়। বিশেষ করে দুই বাংলায় দুর্ভিক্ষের করাল থাবা ছিল সবচেয়ে করুণ। এই করুণ পরিণতির জন্য তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিলকে সরাসরি দায়ী করা হয়েছে একটি নতুন বইয়ে। #চার্চিলস সিক্রেট ওয়ার শীর্ষক বইটি লিখেছেন ভারতীয় লেখিকা মধুশ্রী মুখার্জি। বইটিতে লেখিকা এই দুর্ভিক্ষকে মানবসৃষ্ট বলে নিন্দা করেছেন। চার্চিলের বিরুদ্ধে বইটিতে তিনি অভিযোগ তোলেন, এই দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির পেছনে বর্ণবৈষম্যও তাকে কিছুটা উসকে দিয়েছে। জাপান প্রতিবেশী দেশ #মায়ানমার (তৎকালীন বার্মা) দখল করে নেওয়ার পর তেতাল্লিশের মন্বন্তর শুরু হয়। ওই সময় #বার্মা ছিল চাল আমদানির বড় উৎস। এই মন্বন্তরে বাংলাজুড়ে প্রায় ৩০ লক্ষ লোক না খেয়ে মারা যান। ভারতবর্ষের তৎকালীন #ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক #শাসক #সেনা ও #যুদ্ধে নিয়োজিত কর্মীদের জন্য বিপুল পরিমাণ খাদ্য মজুদ করায় এই দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। মজুদ করার কারণে হু হু করে বেড়ে যায় চালের দাম। একই সঙ্গে বাজারে তা দুষ্প্রাপ্য হয়ে ওঠে। জাপান ভারত দখল করলে খাদ্য যাতে শত্রুর হাতে না পৌঁছায়, এ জন্য ব্রিটিশ সরকার আগাম কিছু ব্যবস্থা নেয়। বাংলাজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা #নৌকা ও গরুর গাড়ি হয় বাজেয়াপ্ত—নয় তো #ধ্বংস করে ফেলে তারা। এতে চাল বা খাদ্য বিতরণ-ব্যবস্থাও ভেঙে পড়ে। বাঙালির প্রধান খাবার চালের আকাল দেখা দেওয়ায় ভাতের জন্য সারা বাংলায় হাহাকার পড়ে যায়। গ্রাম থেকে গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে দুর্ভিক্ষ। পথে-প্রান্তরে লুটিয়ে পড়তে থাকেন না খাওয়া মানুষ। এখানে-ওখানে পড়ে থাকতে দেখা যায় হাড্ডিসার #লাশ। এ সময় জরুরি খাদ্য সরবরাহের জন্য চার্চিলের কাছে আবেদন করেও বারবার প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন ভারতের তৎকালীন ব্রিটিশ কর্মকর্তারা। বিভিন্ন #গ্রাম থেকে তখন বুভুক্ষু হাজার হাজার মানুষ একমুঠো অন্নের আশায় স্রোতের মতো ধাই করেছেন কলকাতার দিকে। দেখা গেছে, এসব অভাগা দলে দলে পথের ওপর পড়ে ধুঁকছেন আর আবর্জনার পাশে উচ্ছিষ্টে ভাগ বসাতে পরস্পর লড়ছেন। একই সময় ব্রিটিশ কর্মকর্তা এবং তাদের তোষামুদে অবস্থাপন্ন ভারতীয় #লোকজন বাড়িতে বসে ভূরিভোজ করছেন। মধুশ্রী মুখার্জির মতে, ব্রিটিশরাজের শাসনামলের এই অন্ধকারতম অধ্যায়টি এত দিন ছিল আড়ালে পড়ে। তিনি তা আলোতে নিয়ে এসেছেন। মধুশ্রী তার বইয়ে এমন সব তথ্যপ্রমাণ তুলে ধরেছেন, এতে ওই দুর্ভিক্ষের দায়ভার সরাসরি চার্চিলের ওপর চেপেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মন্ত্রিসভার যেসব বৈঠক হয়েছে, এসব বৈঠকের বিশ্লেষণ রয়েছে বইয়ে। রয়েছে মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন নথিপত্রের তথ্য। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে মধুশ্রীর ব্যক্তিগত সংগ্রহশালার তথ্য। এসব তথ্যপ্রমাণ থেকে জানা যায়, চালে ঠাসা ব্রিটিশ জাহাজগুলো #অস্ট্রেলিয়া থেকে এসে ভারতের পাশ দিয়ে চলে গেছে ভূমধ্যসাগরীয় এলাকার দিকে। ওই এলাকায় খাদ্যশস্যের বিশাল মজুদ গড়ে তোলা হয়। এক সাক্ষাৎকারে মধুশ্রী মুখার্জি সাংবাদিকদের বলেন, চার্চিল যে ত্রাণ-সহায়তাদানে অক্ষম ছিলেন, এ প্রশ্নই ওঠে না। তিনি ও তার ঘনিষ্ঠ মিত্ররা বারবার এ ধরনের #উদ্যোগ ব্যর্থ করে দিয়েছেন। ওই সময় যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া সহায়তার হাত বাড়াতে চেয়েছিল, কিন্তু চার্চিলের মন্ত্রিসভা তা মেনে নেয়নি। এমনকি এক পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্র যখন নিজের জাহাজে করে খাদ্য পাঠাতে চেয়েছে, ব্রিটিশ শাসক তাও গ্রহণ করেননি। জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটার জার্নালে প্রকাশিত একটি #গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী এই দুর্ভিক্ষের পেছনে প্রাকৃতিক কারণ খুঁজে পায়নি ভারতীয় ও মার্কিন গবেষকদের একটি দল। অর্থাৎ এই দুর্ভিক্ষের জন্য আবহাওয়া নয় বরং তৎকালীন বৃটিশ #প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিলের অমানবিক নীতিই দায়ী ছিলো।
সূত্র :
* পঞ্চাশের মন্বন্তের চার্চিলের ষড়যন্ত্র - মধুশ্রী মুখোপাধ্যায়
* দৈনিক মানবজমিন, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ঈসায়ী।
নিচের হ্যাস ট্যাগ গুলো ব্যবহার করুন:
#Bangladesh #Bangla #Bengali #Dhaka #Bangladeshi #Kolkata
#বাংলাদেশ #বাংলা #বাঙালী #ঢাকা #বাংলাদেশী #কলকাতা
#দুর্ভিক্ষ #চার্চিলস #ব্রিটিশ #শাসক #যুদ্ধে #নৌকা #ধ্বংস #bangladesh #bangla #bengali #dhaka #bangladeshi #kolkata #বাংলাদেশ #বাংলা #বাঙালী #ঢাকা #বাংলাদেশী #কলকাতা #মায়ানমার #বার্মা #সেনা #লাশ #গ্রাম #লোকজন #অস্ট্রেলিয়া #উদ্যোগ #গবেষণা #প্রধানমন্ত্রী
যে বাংলাদেশি পাইলট ইসরায়েলের ৪ টি বিমান ধ্বংস করেছিলেন!!
সাইফুল আজম ১৯৪১ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের পূর্ব বাংলার (বর্তমান বাংলাদেশ) #পাবনা জেলার খগড়বাড়িয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম নুরুল আমিন। বাবার কর্মসূত্রে তাঁর ছোটবেলা কেটেছিল ভারতের কলকাতায়। ১৯৪৭ সালের #দেশ ভাগের সময় তার পরিবার ফিরে আসে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমান বাংলাদেশ)। ১৫ বছর বয়সে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে, ১৯৫৬ সালে উচ্চতর শিক্ষার জন্য পশ্চিম পাকিস্তান যান। ১৯৫৮ সালে তিনি ভর্তি হন পাকিস্তান এয়ার ফোর্স ক্যাডেট কলেজে। দুই বছর পর ১৯৬০ সালে তিনি পাইলট অফিসার হয়ে শিক্ষা সম্পন্ন করেন। একই বছর তিনি জেনারেল ডিউটি পাইলট হিসেবে কমিশনপ্রাপ্ত হয়ে যোগ দেন পাকিস্তান বিমানবাহিনীতে।
সাইফুল আজমের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ হয় মার্কিন সেনাদের প্রশিক্ষণ বিমান সেসনা টি-৩৭ বিমান দিয়ে। প্রশিক্ষণ ও অ্যারিজোনার লুক এয়ার ফোর্স বেসে এফ-৮৬ সেব্রেসের উপর উচ্চ প্রশিক্ষন গ্রহণ করেন। এই কোর্সে তিনি সর্বোচ্চ নাম্বার পেয়ে টপ গান হিসেবে পাশ করেন। আরও পড়াশোনার পর ১৯৬৩ সালে তিনি পাকিস্তান বিমানবাহিনীর ঢাকার কেন্দ্রে নিযুক্ত হন। এরপর তিনি করাচির মৌরিপুর বর্তমানে যা মাশরুর এয়ার বেস এর টি-৩৩ বিমানের প্রশিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হন। এখানে কর্মরত থাকার সময় ১৯৬৫ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সাইফুল আজম পাকিস্তান বিমানবাহিনীর ১৭ নম্বর স্কোয়াড্রনের হয়ে যোগ দেন। ভারতীয় বিমান বাহিনীর ফ্লাইট অফিসার বিজয় মায়াদেবের বিমানকে তিনি ভূপাতিত করেন। পরে বিজয় মায়াদেবকে #যুদ্ধবন্দী হিসেবে আটক করা হয়। ফলে তাকে পাকিস্তানের তৃতীয় সর্বোচ্চ সামরিক পদক সিতারা–ই–জুরাত(সাহসিকতার তারকা) প্রদান করা হয়। ১৯৬৬ সালে পাকিস্তান বিমান বাহিনীর ২য় স্কোয়াড্রনের কমান্ড লাভ করেন।
১৯৬৬ সালের নভেম্বর মাসে জর্দানের বিমানবাহিনী রয়্যাল জর্দানিয়ান এয়ার ফোর্সে পাকিস্তান বিমানবাহিনীর প্রতিনিধি হিসেবে যান ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট সাইফুল আজম। প্রতিনিধি পাঠানো দুজন পাকিস্তানি অফিসারের মধ্যে তিনি একজন ছিলেন। অন্যজন ছিলেন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট এম. সরোয়ার শাদ। সেখানে তিনি জর্দানের বিমানবাহিনীতে উপদেষ্টা হিসেবে পাইলটদের প্রশিক্ষণের কাজ করেন।
১৯৬৭ সালের ৫ জুন তৃতীয় আরব-ইসরায়েলি ছয়দিনের যুদ্ধ শুরু হলে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী বোমাবর্ষণ করে মিশরীয় বিমান বাহিনীর সব বিমান অচল করে দেয়। #ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর হামলা থেকে জর্দানের মূল বেস মাফরাকের প্রতিরক্ষার জন্য তাকে ডাকা হয়। সেসময় জর্দান বিমানবাহিনীর হয়ে সাইফুল আজম হকার হান্টার বিমান নিয়ে ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর আক্রমণের আগমূহুর্তে জর্দানের বিমান বাহিনীর পক্ষে উড্ডয়ন করেন। তিনি অসামান্য #দক্ষতা এবং সাহসিকতার দৃষ্টান্ত রেখে তার বিমানের চেয়ে আধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তির দুইটি ইসরায়েলি মিরাজ ফাইটার বিমান ভূপাতিত করেন।
দুইদিন পর তাকে ইরাকে জরুরি ভিত্তিতে বদলি করে পাঠানো হয়। তিনি ইরাকি বিমান বাহিনীর হয়ে ইসরায়েলি ফাইটারের মোকাবেলা করেন এবং ডগ ফাইটে একটি ইসরায়েলি বিমান ভূপাতিত করেন। #বিমানঘাঁটি আক্রমণের সময় তিনি পশ্চিম ইরাকে ছিলেন। ইসরায়েলি পাইলট ক্যাপ্টেন গিডিওন ড্রোর সাইফুল আজমের উইংমেনসহ দুজন ইরাকি যোদ্ধাকে গুলি করতে সক্ষম হন, এর বিপরীতে সাইফুল আজম তাকে গুলি করতে সক্ষম হন। তিনি ক্যাপ্টেন গোলানের বোমারু বিমানকেও ভূপাতিত করতে সক্ষম হন। পরে দুই ইসরায়েলি বৈমানিককে যুদ্ধবন্দী হিসেবে নিয়ে যাওয়া হয়।
এটি একটি রেকর্ড। দুই দিনের ব্যপ্তিতে তিনি দুইটি ভিন্ন স্থানে আক্রমণ পরিচালনা করে ৪টি ইসরায়েলি ভূপাতিত করেন। এজন্য তাকে জর্দানের অর্ডার অব ইস্তিকলাল ও ইরাকি সাহসিকতা পদক নুত আল সুজাত প্রদান করা হয়।
১৯৬৯ সালে তিনি পাকিস্তানে ফিরে আসেন। পাকিস্তানে ফেরার পর ১৯৬৯ সালে শেনিয়াং এফ-৬ জঙ্গি বিমানের ফ্লাইট কমান্ডার হন সাইফুল আজম । এরপর পাকিস্তান বিমানবাহিনীর ফাইটার লিডারস স্কুল-এর ফ্লাইট কমান্ডারের দায়িত্ব নেন তিনি।
সাইফুল আজম ছিলেন বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমানের প্রশিক্ষক। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার আগ পর্যন্ত সময় ফ্লাইট কমান্ডার হিসেবে বিভিন্ন স্থানে কর্মরত ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধ শুরু হবার আগেই আজম নিজেও পাকিস্তান এয়ারলাইন্স ও বিমান বাহিনীতে তার সহকর্মী বাঙালিদের সাথে গোপনে পরিকল্পনা করছিলেন করাচি থেকে পাকিস্তান এয়ারলাইন্সের একটি জেটবিমান ছিনতাই করার। পরিকল্পনা অনুযায়ী মার্চের ৬ তারিখেই তিনি তার #স্ত্রী ও সন্তানকে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন ঢাকায়। পরবর্তীতে সে #পরিকল্পনা আর সফল করতে পারেন নি।
১৯৭১ সালে সাইফুল আজম মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিতে চেষ্টা করেন। কিন্তু ১৯৭১ সালের শুরুতেই তাঁর ওপর পাকিস্তান বিমানবাহিনীতে সাময়িকভাবে উড্ডয়নে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। #বীরশ্রেষ্ঠ #মতিউর রহমানের টি-৩৩ জঙ্গী বিমান নিয়ে পালিয়ে যাবার সময় মতিউর শহীদ হবার পর পাকিস্তানের #গোয়েন্দা সংস্থা সাইফুল আজমকে রিমান্ডে নেয় এবং টানা ২১ দিন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। মতিউর রহমানের মৃত্যুর পরপর তাকে তার ব্যাচমেট পাকিস্তানি অফিসার সেসিল চৌধুরী #বন্দি করে নিয়ে যান এবং ১৯৭২ সাল পর্যন্ত অজ্ঞাত স্থানে বন্দি করে রাখেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং ১৯৭৭ সালে উইং #কমান্ডার পদে উন্নীত হন। তাকে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ঢাকা ঘাঁটির অধিনায়ক করা হয়েছিল। বিমান বাহিনীতে ডিরেক্টর অব #ফ্লাইট সেফটি ও ডিরেক্টর অব অপারেশন্স হিসেবে যোগ দেন। এরপর তিনি ঢাকা বিমানঘাঁটির কমান্ড লাভ করেন এবং গ্রুপ ক্যাপ্টেন হিসেবে পদোন্নতি পান। ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী থেকে গ্রুপ ক্যাপ্টেন হিসেবে অবসর নেন তিনি
তিনি ১৯৮২ থেকে ১৯৮৪ এবং ১৯৮৭ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (ক্যাব) চেয়ারম্যান হিসেবে দুইবার দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের (এফডিসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এছাড়াও তিনি নাতাশা ট্রেডিং এজেন্সির ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে ও নিজ স্ত্রীর সাথে একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে ব্যবসায় যোগ দেন।
সাইফুল আজম বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের হয়ে রাজনীতি করতেন। তিনি পাবনা-৩ আসন থেকে (চাটমোহর উপজেলা, ফরিদপুর উপজেলা ও ভাঙ্গুরা উপজেলা) পঞ্চম ও ষষ্ঠ জাতীয় সংসদের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সাবেক প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল ফখরুল আজম (মেয়াদ ২০০২-২০০৭) সম্পর্কে তাঁর চাচাত ভাই ছিলেন। সাইফুল আজম নিশাত আজমকে বিবাহ করেন। নিশাত আজম একজন আইনজীবী। তাঁদের পুত্র এবং কন্যা সন্তান ছিলো।
সাইফুল আজম ২০২০ সালের ১৪ই জুন দুপুর ১টায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল, ঢাকায় (সিএমএইচ) মৃত্যুবরণ করেন। ১৫ জুন ২০২০, সোমবার দুপুর পৌনে ২টায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি বাশার এর প্যারেড গ্রাউন্ডে (বিগটপ হ্যাঙ্গার) সাইফুল আজমের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শাহীন কবরস্থানে তার মরদেহ সমাহিত করা হয় এবং একটি যুদ্ধবিমানের ফ্লাইপাস্ট আয়োজন করা হয়।
কৃতিত্বঃ
সাইফুল আজম একমাত্র #সামরিক পাইলট, যিনি যুদ্ধে চারটি বিমান বাহিনীর (বাংলাদেশ, জর্দান, ইরাক ও পাকিস্তান) হয়ে কাজ করেছেন। সেই সঙ্গে দুইটি ভিন্ন প্রতিপক্ষের (ভারত ও ইসরায়েল) বিরুদ্ধে লড়াই করার অনন্য কৃতিত্ব রয়েছে তার। ২০১২ সালে পাকিস্তান সরকারের মতে যেকোনো পাইলটের চেয়ে সবচেয়ে বেশি ইসরায়েলি #বিমান ভূপাতিত করার রেকর্ড তার রয়েছে। তিনি মোট চারটি ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেন, যা এখন পর্যন্ত যেকোনো পাইলটের জন্য সর্বোচ্চ। ১৯৬১ সালের এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনার লুক #এয়ার #ফোর্স বেস থেকে #প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর মার্কিন বিমান বাহিনী সাইফুল আজমকে টপ গান উপাধি দেয়।
১৯৬৫ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধে কৃতিত্বের পুরস্কার স্বরূপ পাকিস্তানের তৃতীয় সর্বোচ্চ সামরিক পদক সিতারা–ই–জুরাত পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি।
একক ব্যক্তি হিসেবে আকাশপথের যুদ্ধের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক ইসরায়েলি বিমান ভূপাতিত করার কৃতিত্ব স্বরূপ জর্দান থেকে তাকে হুসাম-ই-ইস্তিকলাল সম্মাননায় ভূষিত করা হয়।
১৯৬৭ সালে ছয়দিনের #যুদ্ধে কৃতিত্ব স্বরূপ ইরাকি সাহসিকতা পদক নুত-আল-শুজাত পুরস্কারে ভূষিত করা হয় তাকে।
যুদ্ধক্ষেত্রে অনন্য সব অর্জনের স্বীকৃতি হিসেবে সাইফুল আজমকে ২০০১ সালে মার্কিন #বিমান বাহিনী বিশ্বের ২২ জন লিভিং ঈগলসের একজন হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
সাইফুল আজমের আটটি দেশের আটটি পৃথক বিমান বাহিনীতে পরিচালনার প্রশংসাপত্র রয়েছে। দেশগুলো হলো, পাকিস্তান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড, জর্দান, ইরাক, রাশিয়া, চীন এবং বাংলাদেশ।
ফিলিস্তিনের ইতিহাসবিদ ওসামা আল-আশ্কার প্রশংসা করে বলেন, “তিনি ছিলেন একজন মহান বৈমানিক”। তিনি আরো বলেন, “জেরুজালেমের পবিত্র স্থান আল-আকসা মসজিদকে প্রতিরোধ ও রক্ষার জন্য বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের ভ্রাতৃদ্বয় আমাদের অংশীদার ছিলো”। ফিলিস্তিনি অধ্যাপক নাজি শৌকরি বলেন, “সাইফুল আজম ফিলিস্তিনকে ভালোবাসতেন এবং জেরুজালেমের স্বার্থে লড়াই করেছিলেন”। খ্যাতনামা ফিলিস্তিনি #সাংবাদিক তামির আল মিশাল তাকে “আকাশের ঈগল” বলে অভিহিত করেন।
নিচের হ্যাস ট্যাগ গুলো ব্যবহার করুন:
#Bangladesh #Bangla #Bengali #Dhaka #Bangladeshi #Kolkata
#বাংলাদেশ #বাংলা #বাঙালী #ঢাকা #বাংলাদেশী #কলকাতা
#বন্দি #কমান্ডার #ফ্লাইট #bangla #kolkata #গোয়েন্দা #সামরিক #বিমান #ফোর্স #প্রশিক্ষণ #যুদ্ধে #bangladesh #bengali #bangladeshi #বাংলাদেশী #কলকাতা #বাংলা #বাঙালী #ঢাকা #পাবনা #দেশ #যুদ্ধবন্দী #ইসরায়েলি #দক্ষতা #বিমানঘাঁটি #স্ত্রী #পরিকল্পনা #বীরশ্রেষ্ঠ #মতিউর #এয়ার #সাংবাদিক #dhaka #বাংলাদেশ