১৩৫০ বঙ্গাব্দে ( খ্রি. ১৯৪৩) এই #দুর্ভিক্ষ হয়েছিল বলে একে 'পঞ্চাশের মন্বন্তর' বলা হয়। বিশেষ করে দুই বাংলায় দুর্ভিক্ষের করাল থাবা ছিল সবচেয়ে করুণ। এই করুণ পরিণতির জন্য তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিলকে সরাসরি দায়ী করা হয়েছে একটি নতুন বইয়ে। #চার্চিলস সিক্রেট ওয়ার শীর্ষক বইটি লিখেছেন ভারতীয় লেখিকা মধুশ্রী মুখার্জি। বইটিতে লেখিকা এই দুর্ভিক্ষকে মানবসৃষ্ট বলে নিন্দা করেছেন। চার্চিলের বিরুদ্ধে বইটিতে তিনি অভিযোগ তোলেন, এই দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির পেছনে বর্ণবৈষম্যও তাকে কিছুটা উসকে দিয়েছে। জাপান প্রতিবেশী দেশ #মায়ানমার (তৎকালীন বার্মা) দখল করে নেওয়ার পর তেতাল্লিশের মন্বন্তর শুরু হয়। ওই সময় #বার্মা ছিল চাল আমদানির বড় উৎস। এই মন্বন্তরে বাংলাজুড়ে প্রায় ৩০ লক্ষ লোক না খেয়ে মারা যান। ভারতবর্ষের তৎকালীন #ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক #শাসক #সেনা ও #যুদ্ধে নিয়োজিত কর্মীদের জন্য বিপুল পরিমাণ খাদ্য মজুদ করায় এই দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। মজুদ করার কারণে হু হু করে বেড়ে যায় চালের দাম। একই সঙ্গে বাজারে তা দুষ্প্রাপ্য হয়ে ওঠে। জাপান ভারত দখল করলে খাদ্য যাতে শত্রুর হাতে না পৌঁছায়, এ জন্য ব্রিটিশ সরকার আগাম কিছু ব্যবস্থা নেয়। বাংলাজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা #নৌকা ও গরুর গাড়ি হয় বাজেয়াপ্ত—নয় তো #ধ্বংস করে ফেলে তারা। এতে চাল বা খাদ্য বিতরণ-ব্যবস্থাও ভেঙে পড়ে। বাঙালির প্রধান খাবার চালের আকাল দেখা দেওয়ায় ভাতের জন্য সারা বাংলায় হাহাকার পড়ে যায়। গ্রাম থেকে গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে দুর্ভিক্ষ। পথে-প্রান্তরে লুটিয়ে পড়তে থাকেন না খাওয়া মানুষ। এখানে-ওখানে পড়ে থাকতে দেখা যায় হাড্ডিসার #লাশ। এ সময় জরুরি খাদ্য সরবরাহের জন্য চার্চিলের কাছে আবেদন করেও বারবার প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন ভারতের তৎকালীন ব্রিটিশ কর্মকর্তারা। বিভিন্ন #গ্রাম থেকে তখন বুভুক্ষু হাজার হাজার মানুষ একমুঠো অন্নের আশায় স্রোতের মতো ধাই করেছেন কলকাতার দিকে। দেখা গেছে, এসব অভাগা দলে দলে পথের ওপর পড়ে ধুঁকছেন আর আবর্জনার পাশে উচ্ছিষ্টে ভাগ বসাতে পরস্পর লড়ছেন। একই সময় ব্রিটিশ কর্মকর্তা এবং তাদের তোষামুদে অবস্থাপন্ন ভারতীয় #লোকজন বাড়িতে বসে ভূরিভোজ করছেন। মধুশ্রী মুখার্জির মতে, ব্রিটিশরাজের শাসনামলের এই অন্ধকারতম অধ্যায়টি এত দিন ছিল আড়ালে পড়ে। তিনি তা আলোতে নিয়ে এসেছেন। মধুশ্রী তার বইয়ে এমন সব তথ্যপ্রমাণ তুলে ধরেছেন, এতে ওই দুর্ভিক্ষের দায়ভার সরাসরি চার্চিলের ওপর চেপেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মন্ত্রিসভার যেসব বৈঠক হয়েছে, এসব বৈঠকের বিশ্লেষণ রয়েছে বইয়ে। রয়েছে মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন নথিপত্রের তথ্য। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে মধুশ্রীর ব্যক্তিগত সংগ্রহশালার তথ্য। এসব তথ্যপ্রমাণ থেকে জানা যায়, চালে ঠাসা ব্রিটিশ জাহাজগুলো #অস্ট্রেলিয়া থেকে এসে ভারতের পাশ দিয়ে চলে গেছে ভূমধ্যসাগরীয় এলাকার দিকে। ওই এলাকায় খাদ্যশস্যের বিশাল মজুদ গড়ে তোলা হয়। এক সাক্ষাৎকারে মধুশ্রী মুখার্জি সাংবাদিকদের বলেন, চার্চিল যে ত্রাণ-সহায়তাদানে অক্ষম ছিলেন, এ প্রশ্নই ওঠে না। তিনি ও তার ঘনিষ্ঠ মিত্ররা বারবার এ ধরনের #উদ্যোগ ব্যর্থ করে দিয়েছেন। ওই সময় যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া সহায়তার হাত বাড়াতে চেয়েছিল, কিন্তু চার্চিলের মন্ত্রিসভা তা মেনে নেয়নি। এমনকি এক পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্র যখন নিজের জাহাজে করে খাদ্য পাঠাতে চেয়েছে, ব্রিটিশ শাসক তাও গ্রহণ করেননি। জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটার জার্নালে প্রকাশিত একটি #গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী এই দুর্ভিক্ষের পেছনে প্রাকৃতিক কারণ খুঁজে পায়নি ভারতীয় ও মার্কিন গবেষকদের একটি দল। অর্থাৎ এই দুর্ভিক্ষের জন্য আবহাওয়া নয় বরং তৎকালীন বৃটিশ #প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিলের অমানবিক নীতিই দায়ী ছিলো।
সূত্র :
* পঞ্চাশের মন্বন্তের চার্চিলের ষড়যন্ত্র - মধুশ্রী মুখোপাধ্যায়
* দৈনিক মানবজমিন, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ঈসায়ী।
নিচের হ্যাস ট্যাগ গুলো ব্যবহার করুন:
#Bangladesh #Bangla #Bengali #Dhaka #Bangladeshi #Kolkata
#বাংলাদেশ #বাংলা #বাঙালী #ঢাকা #বাংলাদেশী #কলকাতা
#দুর্ভিক্ষ #চার্চিলস #ব্রিটিশ #শাসক #যুদ্ধে #নৌকা #ধ্বংস #bangladesh #bangla #bengali #dhaka #bangladeshi #kolkata #বাংলাদেশ #বাংলা #বাঙালী #ঢাকা #বাংলাদেশী #কলকাতা #মায়ানমার #বার্মা #সেনা #লাশ #গ্রাম #লোকজন #অস্ট্রেলিয়া #উদ্যোগ #গবেষণা #প্রধানমন্ত্রী
উসমানী শাসকদের সর্বশেষ উত্তরাধিকার খলিফা দ্বিতীয় আব্দুল মজিদ'র সর্বশেষ পরিণতি কি হয়েছিল?
১৯৪৪ সালের ২৩ আগস্ট ফ্রান্সের রাজধানী #প্যারিসে মৃত্যুবরণ করেন। #উসমানী শাসকদের সর্বশেষ #উত্তরাধিকার খলিফা দ্বিতীয় আব্দুল মজিদ। জীবনের শেষ দিনগুলোয় কষ্ট ও মনোবেদনায় ভুগে নির্বাক হয়ে পড়েছিলেন তিনি। চোখের সামনে তাঁর পূর্বসূরিদের ৬২৪ বছরের কীর্তিময় শাসনের করুণ #সমাপ্তি তাঁকে প্রতিনিয়ত দুঃখ-ভারাক্রান্ত করে রাখত।
মৃত্যুর আগে #আব্দুল #মজিদের শেষ ইচ্ছা ছিল, তাঁর লাশ যেন তুরস্কের #তারিবা কবরস্থানে #দাফন করা হয়। কারণ, এই কবরস্থানে চিরশয্যায় সমাহিত হয়েছেন তাঁর পিতা সুলতান আব্দুল আজিজ,
পিতামহ সুলতান দ্বিতীয় মাহমুদ এবং চাচাতো ভাই সুলতান দ্বিতীয় আব্দুল হামিদ। #তুরস্ক থেকে নির্বাসিত হলেও অন্তত মৃত্যুর পর যেন পরিবারের পাশে নিজের জন্মভূমিতে তাঁর শেষ স্থন হয়, এটা ছিল তাঁর জীবনের শেষ চাওয়া।
পিতার মৃত্যু ব্যথিত করে তোলে দুররে শাহওয়ারকে। বাবার শেষ স্বপ্ন পূরণে তিনি ছুটে যান তুরস্কে, অনেক বছর আগে মাত্র ১০ বছর বয়সে তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল যে #জনপদ থেকে। তুরস্কের তৎকালীন #প্রধানমন্ত্রী ইসমত ইতুনুকে দুররে শাহওয়ার অনুরোধ করেন, তাঁর মরহুম পিতা এবং উসমানি সাম্রাজ্যের সর্বশেষ খলিফার লাশ যেন তুরস্কের মাটিতে দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়।
তত দিনে অনেক বদলে গেছে তুরস্ক। শাসকদলের সদস্যদের মনে তখনো উসমানি পরিবারের প্রতি ঘৃণা ও বিদ্বেষ জমে আছে। কাজেই খলিফা কন্যার এই আকুতি তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী নির্দয়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেন। বিষণ্ণ মনে ফ্রান্সে ফিরে আসেন দুররে শাহওয়ার। পিতার প্রতি গভীর ভালোবাসার শপথ নেন দীর্ঘ প্রতীক্ষার। যে করেই হোক, পূর্বপুরুষের মাটি
তুরস্কে পিতাকে দাফন করার ইচ্ছায় অপেক্ষায় থাকেন সময়ের পালাবদ বাবার স্বপ্নপূরণের প্রত্যাশায় দীর্ঘ ১০ বছর খলিফা আব্দুল মজিদের মৃতদেহ প্যারিসের একটি মসজিদে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেন দুররে শাহওয়ার। ১৯৫৪ সালের #নির্বাচনে ক্ষমতার পরিবর্তন ঘটে তুরস্কে।
নতুন #প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন ডানপন্থী দলের নেতা #আদনান #মান্দারিস। খবর পেয়ে দুররে শাহওয়ার আবারও ছোটেন তুরস্কের উদ্দেশে। নতুন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাকে সবিনয় অনুরোধ করেন, তাঁর মরহুম বাবার #লাশ যেন তুরস্কের মাটিতে দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়। উসমানি পরিবারের এই রাজকন্যার আকুতি শোনেন প্রধানমন্ত্রী। জাতীয় পরিষদের সম্মতি পেলে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন, আশ্বাস দেন তাঁকে।
তুরস্কের জাতীয় পরিষদে প্রস্তাব তোলা হলো সর্বশেষ উসমানি খলিফা আব্দুল মজিদের লাশ দাফনের। উসমানি পরিবারের প্রতি বিরাগভাজন কয়েকজন সদস্য এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন। ফলে প্রস্তাবটি আর পাস হলো না। আধুনিক তুরস্কের সংকীর্ণতার কাছে আবারও হেরে গেলেন দুররে শাহওয়ার। খেলাফত ব্যবস্থা পতনের পর কয়েক দশক পেরিয়ে যাওয়ার পরও উসমানি পরিবারের এক খলিফার লাশ তুরস্কের মাটিতে দাফনের সুযোগ দেয়নি তুরস্কের জাতীয় পরিষদ ।
ক্ষোভে ও দুঃখে কান্নায় ভেঙে পড়েন দুররে শাহওয়ার। এই অপমান ওলাঞ্ছনা আর পিতার স্বপ্নপূরণে এক দশকের ব্যর্থতা বুকে চেপে শেষবারের মতো তুরস্ক ত্যাগ করেন দূররে শাহওয়ার।
তাঁর এমন করুণ দুঃসময়ে এগিয়ে আসেন #সৌদি আরবের বাদশাহ সউদ বিন আব্দুল আজিজ। #উসমানি পরিবারের এই মরহুম মুসলিম #খলিফার প্রতি সম্মান দেখিয়ে পবিত্র নগরী মদিনার জান্নাতুল বাকিতে তাঁর লাশ দাফনের অনুমতি দেন তিনি। পূর্বপুরুষদের কবরস্থানে জায়গা না পেলেও পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব নবিজির রওজা মুবারকের প্রতিবেশী হয়ে পবিত্র মাটিতে পেলেন মুসলিম জাহানের এই সর্বশেষ উসমানি #খলিফা। ১৯৫৪ সালের ৩০ মার্চ তাঁকে দাফন করা হয় জান্নাতুল বাকিতে।
পিতার প্রতি তুরস্কের এই অন্যায় ও প্রতিহিংসামূলক নির্দয় আচরণের প্রতিবাদে পরে সুযোগ পেয়েও আর কোনো দিন তুরস্কের জাতীয়তা ফেরত নেননি দুররে শাহওয়ার। মৃত্যু পর্যন্ত ইংল্যান্ডের জাতীয়তা নিয়ে বেঁচে ছিলেন তিনি।
লন্ডনে থাকাকালে ২০০৬ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রাতে ৯২ বছর বয়সে পরপারে পাড়ি জমান ইতিহাসের সাক্ষী এই #রাজকন্যা। মৃত্যুর আগে দুই পুত্রকে তিনি অসিয়ত করেছিলেন, তাঁর লাশ যেন লন্ডনের এক মুসলিম কবরস্থানে দাফন করা হয়। গুণী ও সংগ্রামী রাজকন্যা পুররে শাহওয়ার ছিলেন চিত্রশিল্পী হওয়ার পশপাশি প্রচণ্ড মেধাবী। পৃথিবীর আটটি ভাষায় কথা বলার দক্ষতা ছিল তাঁর। তাঁর একমাত্র ভাই ওমর ফারুক ১৯৬৯ সালে মৃত্যুবরণ করেন এবং তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সমাহিত হন।
ভাবতেই অবাক লাগে, যে উসমানীয় খিলাফতের শাসকরা ৬২৪ বছর তিন মহাদেশ দাঁপিয়ে বেড়িয়েছিলেন তাদের বংশধররাই কিনা মৃত্যুর পর লাশ দাফনের জন্য তুরস্কের ভূখন্ডে সামান্য একটু জায়গা পাননি। জীবনের শেষ মুহুর্তগুলো কিনা অতিবাহিত করে গেছেন অন্যান্য মুসলিম শুভাকাঙ্ক্ষীদের সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে.... 😢
নিচের হ্যাস ট্যাগ গুলো ব্যবহার করুন:
#Bangladesh #Bangla #Bengali #Dhaka #Bangladeshi #Kolkata
#বাংলাদেশ #বাংলা #বাঙালী #ঢাকা #বাংলাদেশী #কলকাতা
#বাংলাদেশী #উসমানী #উত্তরাধিকার #জনপদ #আদনান #মান্দারিস #লাশ #খলিফা #রাজকন্যা #bangladesh #bangla #bengali #বাংলাদেশ #প্যারিসে #সমাপ্তি #আব্দুল #মজিদের #তারিবা #দাফন #তুরস্ক #প্রধানমন্ত্রী #নির্বাচনে #সৌদি #উসমানি #খলিফার #dhaka #bangladeshi #kolkata #বাংলা #বাঙালী #ঢাকা #কলকাতা